‘মহাসুবিধায়’ বিএনপি : এইচটি ইমাম
আসন্ন দুই সিটির নির্বাচনে বিএনপি ‘মহাসুবিধায়’ আছে, অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ‘মুখে কুলুপ’ পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের জাতীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমাম।
বুধবার (০৮ জানুয়ারি) আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশন ভবনে কমিশনের সঙ্গে আওয়ামী লীগ প্রতিনিধিদলের বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
এইচটি ইমাম বলেন, ‘নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী- সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারে না। এক্ষেত্রে বিএনপি মহাসুবিধায় আছে। তাদের তো সকল নেতাই প্রচারে অংশ নিতে পারবেন। কিন্তু আমাদের তো মুখে কুলুপ লাগানো। ২০০৪ সালের লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের বিষয়টি আমিই সামনে এনেছিলাম। কিন্তু পরিস্থিতিতে আমাদের চাইতে বিএনপির অনেক উপরে। তাদের প্রচার কাজ চালাতে বাধা নেই।’
আচরণবিধিতে নির্বাচনী কার্যক্রমে অংশ নেয়ার ক্ষেত্রে সরকারি সুবিধাভোগী অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে মন্ত্রী, এমপিদের বাধা রয়েছে। কিন্তু ঢাকার দুই সিটি ভোটের কার্যক্রমে এমপিদের সম্পৃক্ত করেছে আওয়ামী লীগ। বিষয়টি কিভাবে ব্যাখ্যা করবেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেটা তো দলীয় কার্যক্রম। নির্বাচনী কার্যক্রম নয়। এছাড়া নির্বাচনী প্রচারও এখনও শুরু হয়নি।’
সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন ডিএনসিসি নির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থীর (উত্তরের মেয়র প্রার্থী আতিকুল ইসলামের) নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন করেছেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড সরকার দলীয় এমপিরা আরও করবেন কি-না, এমন প্রশ্নের জবাবে এইচটি ইমাম বলেন, ‘এটা তো বলতে পারবো না।’
সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখনও পোলিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়নি। নিয়োগ দেয়া হলে তখন দেখবো, দলীয় কেউ নিয়োগ পেয়েছে কি-না। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ ভোটগ্রহণ হোক। এজন্য সরকার কী সহায়তা করতে পারে, সেটা নিয়ে আলোচনা করতে এসেছিলাম।’
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার নিয়ে তিনি বলেন, ‘যন্ত্র আ.লীগ, বিএনপি চেনে না। কমিশনকে ধন্যবাদ। তারা অনেক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন, যারা দায়িত্ব পালন করবেন, তারা বিষয়টা জানেন। সেনাবাহিনী এখানে টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেবে। ব্যাকআপ হিসেবে ৫০ শতাংশ মেশিন রাখা হবে। যাতে একটিতে সমস্যা হলে সঙ্গে সঙ্গে আরেকটি লাগিয়ে দেয়া যায়।’
বিএনপি নেতাকর্মীদের ধরপাকড়ের অভিযোগ নিয়ে এইচটি ইমাম বলেন, ‘আমরা এরকম কোনও ঘটনা দেখিনি। এমন অভিযোগ যারা করছেন, তারা সব সময়ই করেন। সব সময়ই এমন বলেন। কাউকে ধরপাকড় ও এলাকা ছাড়া করার মতো পরিস্থিতি ঘটেনি।’
আচরণবিধি সংশোধন করে নিজেরা সুবিধা চান কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা বলতে চাই না আমাদের সুবিধার জন্য পরিবর্তন করা হোক। পরিস্থিতি যদি সৃষ্টি হয়, তবে সংশোধন নিয়ে ভাবা যাবে। আমরাই জেনেশুনে আইন করেছি।’
নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদারের নেতৃত্বে বৈঠকে অন্যদের মধ্যে নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, রফিকুল ইসলাম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) শাহাদাত হোসেন চৌধুরী এবং দুই সিটি করপোরেশনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন ও আবুল কাশেম উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচটি ইমামের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলে ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর অর্থ উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ এমপি, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক সেলিম মাহমুদ, নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট দেবুল কুমার প্রমুখ।